মঙ্গলবার, ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একদিনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৬

ক্রাইম রিপোর্ট ডেস্ক [] তিন জেলায় র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি’র সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ছয়জন। তাদের মধ্যে কক্সবাজারেই পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই রোহিঙ্গাসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া রাজধানীতে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন ও গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতের বিভিন্ন সময়ে এ ঘটনাগুলো ঘটে। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।

রাজধানীর মাটিকাটা এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নরসিংদীর ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ শফিকুল ইসলাম শফিক (২৮) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় র‌্যাবের এক সদস্যও আহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রদীপ চন্দ্র (৩৫) ও ফারুক হোসেন (৩২) নামে শফিকের দুই সহযোগীকে  গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

মঙ্গলবার রাত ১২টার পর এ ঘটনা ঘটে। র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন জানান, নরসিংদীর অপরাধীদের তালিকায় এক নম্বর আসামি শফিকুল। তার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে গেলে সে ও তার সহযোগীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব পাল্টা গুলি চালালে শফিকুল গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত  ঘোষণা করেন। র‌্যাব সূত্র জানায়, নরসিংদীর শীর্ষ সন্ত্রাসী শফিকুল তিনটি হত্যা মামলা, চারটি অস্ত্র মামলাসহ অন্তত একডজন মামলার পলাতক আসামি।

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারের টেকনাফ ও পেকুয়ায় পৃথক বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোররাতে বিজিবি ও র‌্যাবের সঙ্গে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসময় এক লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবা ও ৮টি অস্ত্র ও ২৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়ন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার ও র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

টেকনাফে নিহতরা হলো- কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যামেপর মো. তাহেরের ছেলে মোহাম্মদ ইলিয়াস (১৮) ও বালুখালী ক্যামেপর মো. ইদ্রিসের ছেলে মো. ফারুক মিয়া। তাদের গলায় রোহিঙ্গা কার্ড ছিল। তারা ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। তখন থেকেই তারা মিয়ানমারে আসা-যাওয়া করে মাদক ব্যবসা করছিলো বলে বিজিবি ও র‌্যাব জানিয়েছে।

টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়ন বিজিবি’র ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৪টার দিকে বিজিবি’র একটি দল টেকনাফের হোয়াইক্যং ঝিমংখালীর খারাংখালী নাফনদ সীমান্ত এলাকায় দু’ব্যক্তি নদ পার হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করে। কর্তব্যরত বিজিবি’র সদস্যরা বাধা দিতে গেলে বিজিবিকে লক্ষ্য করে তারা গুলি ছুড়ে। এসময় আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর গুলির আওয়াজ থেমে গেলে ঘটনাস্থলে দুজনের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের সঙ্গে থাকা পুঁটলি তল্লাশি করে এক লাখ নব্বই হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। পরে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে। টেকনাফ থানা পুলিশের ওসি তদন্ত এসএম দোহা জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

কক্সবাজারের উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়ার মগনামা ঘাট এলাকায় র‌্যাব-৭ এর টহল দলের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরো দুজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার শেষ রাতের দিকে এ গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। র‌্যাব কর্মকর্তা মেজর মেহেদী হাসান জানান, মগনাঘাট এলাকায় একদল জলদস্যু জড়ো হয়েছে জানতে পেরে র‌্যাব-৭’র একটি দল ঘটনাস্থলে টহলে যায়। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে জলদস্যুরা গুলি করে। র‌্যাবও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে কিছুক্ষণ পর জলদস্যুরা পিছু হটে। গুলির আওয়াজ থেমে গেলে ঘটনাস্থল থেকে দু’জনের গুলিবিদ্ধ লাশ ও আটটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ২৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়। পরে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পেকুয়া থানা পুলিশ। পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন ভূঁইয়া তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্টাফ রিপোর্টার, টঙ্গী থেকে জানান: গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাই মামলায় এক আসামি  গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের অভিযানের মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে গাজীপুরা বাঁশপট্টি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।  নিহত মো. কাউসার (২৮) টঙ্গীর এরশাদনগরের ছয় নম্বর ব্লকের মিন্টু মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় ছিনতাই ও ডাকাতির পাঁচটি মামলার তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ- কমিশনার (ক্রাইম) মো. শরিফুর রহমান শরিফ জানান, নিহত কাউসার এরশাদনগর এলাকার ‘কুখ্যাত ছিনতাইকারী’। তাকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার সহযোগীদের  গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একটি দল তাকে নিয়ে গাজীপুরা বাঁশপট্টি এলাকায় অভিযানে যায়। সেখানে পৌঁছানোর পর কাউসারকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তার সহযোগীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলি হয়। এক পর্যায়ে কাউসারের গায়ে গুলি লাগলে অন্যরা পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ কাউসারকে প্রথমে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে তার মৃত্যু হয় বলে উপ- কমিশনার শরিফ জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category